গ্রন্থাগারে যাওয়ার আনন্দ (এই নিয়ে দিদিমণি ও ছাত্রীর মধ্যে সংলাপ) |
শিক্ষিকা : এত হন্তদন্ত হয়ে কোথায় যাচ্ছ চন্দ্রিমা।
চন্দ্রিমা : পাঠাগারে। আসলে এই বইটা আজ ফেরত দিতে হবে; তাই।
শিক্ষিকা : চলো। আমিও যাব। আমারও একটা বই দরকার। তুমি কী পড়ছিলে?
চন্দ্রিমা : সৈয়দ মুজতবা আলীর ‘দেশেবিদেশে’।
শিক্ষিকা : বাহ। চমৎকার লেখা।
চন্দ্রিমা : হ্যাঁ, ম্যাম। আমি তো দুবার পড়ে ফেললাম।
শিক্ষিকা : ভালো লাগলে আমিও তাই করি। তুমি আজকে কী বই নেবে কিছু ভেবেছ।
চন্দ্রিমা আজকে অন্নদাশংকর রায় কিংবা প্রবোধকুমার সান্যালের কোনো একটা বই তুলব ভেবেছি।
শিক্ষিকা : তোমার ভ্রমণমূলক লেখা খুব ভালো লাগে বুঝি।
চন্দ্রিমা : হ্যাঁ, তবে সব ধরনের লেখাই পড়ি। আমাদের স্কুলের পাঠাগারে যে কত রকমের বই আছে, দেখলেই অবাক লাগে।
শিক্ষিকা : মানুষের আবহমানকালের সাধনার সাক্ষ্য বহন করে চলেছে এই সমস্ত বই। দেখো পাঠাগারের দেওয়ালের তাকগুলোয়, সাহিত্য-শিল্প-দর্শন কিংবা বিজ্ঞানের এক একটা আশ্চর্য জগৎ যেন আমাদেরই সঙ্গলাভের অপেক্ষায় নীরবে দাঁড়িয়ে।
চন্দ্রিমা : কী সুন্দর বললেন ম্যাম। এই বিরাট ঘরটায় পা দিলেই আমারও ঠিক এই অনুভূতিটাই হয়। কত মানুষের কত বিচিত্র উপলব্ধি, অভিজ্ঞতা আর ভাবধারা মনের গভীরে নানান ভাষায় কথা বলে ওঠে।
শিক্ষিকা : বেশ বলেছ চন্দ্রিমা। ‘বিশ্ব সাথে যোগে যেথায় বিহারও, সেইখানে যোগ তোমার সাথে আমারও’- প্রতিটি পাঠাগারের মনের কথা যেন এটাই।
চন্দ্রিমা : বাবা প্রায়ই বই কিনে দেন আর বলেন, বিখ্যাত প্রাবন্ধিক কার্লাইল নাকি বলেছিলেন, “The true university of our days is a collection of books’। চাইলে ঘরেই আমরা নিজের পছন্দের গ্রন্থাগার গড়ে তুলতে পারি।
শিক্ষিকা : পারি তো। আমরা দিদিমণিরা একসঙ্গে দুটো বই তুলতে পারি, আজকে আমি তোমায় একটা বই পড়তে দেব। মানে প্রবোধবাবু আর অন্নদাশংকরের দুটো বই-ই তুমি পড়বে। ঠিক আছে। যাও খুঁজে নাও।
চন্দ্রিমা : দারুণ ম্যাম। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।