আবর্তন কাকে বলে? সরল ও অ-সরল বা সীমিত আবর্তনের পার্থক্য লেখো।

আবর্তন কাকে বলে? সরল ও অ-সরল বা সীমিত আবর্তনের পার্থক্য লেখো।
আবর্তন কাকে বলে? সরল ও অ-সরল বা সীমিত আবর্তনের পার্থক্য লেখো।

আবর্তন: 

যে অমাধ্যম যুক্তিতে হেতুবাক্যের উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদ যথাক্রমে সিদ্ধান্তের বিধেয় ও উদ্দেশ্য পদ হয়, এবং হেতুবাক্যের ও সিদ্ধান্তের গুণের কোনো পরিবর্তন হয় না এবং উভয়ের অর্থেরও কোনো পরিবর্তন হয় না, সেই অমাধ্যম যুক্তিকে আবর্তন (Conversion) বলে। যে বচন থেকে সিদ্ধান্ত নিঃসৃত হয় সেই বচনকে বলে আবর্তনীয় (convertend) আর যে সিদ্ধান্ত ওই আবর্তনীয় বচন থেকে নিঃসৃত হয়, তাকে বলে আবর্তিত (converse)। যেমন–
কোনো কোনো ভারতীয় হয় বাঙালি (1)-আবর্তনীয়।
∴ কোনো কোনো বাঙালি হয় ভারতীয় (1)-আবর্তিত।

সরল ও অ-সরল আবর্তনের পার্থক্য:

যে আবর্তনে হেতুবাক্য ও সিদ্ধান্তের মধ্যে পরিমাণগত কোনো পার্থক্য থাকে না তাকে সরল আবর্তন (Simple Conversion) বলে। এক্ষেত্রে হেতুবাক্য সামান্য হলে সিদ্ধান্ত সামান্য হয়, হেতুবাক্য বিশেষ হলে সিদ্ধান্তও বিশেষ হয়। আমরা জানি E এবং । বচনকে আবর্তন করলে E এবং। বচনই পাওয়া যায়। সুতরাং আমরা বলব- E এবং I বচনের সরল আবর্তন হয়। সরল আবর্তনে হেতুবাক্য ও সিদ্ধান্ত সমার্থক (equivalent) হয়। যেমন–
কোনো মানুষ নয় অমর (E)। 
∴ কোনো অমর নয় মানুষ (E)।
যে আবর্তনে হেতুবাক্য ও সিদ্ধান্তের পরিমাণ ভিন্ন হয়, হেতুবাক্যের পরিমাণ সিদ্ধান্তে হ্রাস পায়, সেই আবর্তনকে বলা হয় অ-সরল আবর্তন (Conversion by limitation)। হেতুবাক্য এক্ষেত্রে সামান্য বচন হয় এবং সিদ্ধান্ত বিশেষ বচন হয়। হেতুবাক্য বিশেষ বচন, সিদ্ধান্ত সামান্য বচন-এ কখনও হয় না। কারণ, সেক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত হেতুবাক্যের তুলনায় ব্যাপকতর হয়ে যাবে। অ-সরল আবর্তনে হেতুবাক্য ও সিদ্ধান্ত সমার্থক হয় না। A বচনের আবর্তন হল অ-সরল আবর্তন; কেন-না A বচন হেতুবাক্য হলে সিদ্ধান্ত। বচন হয়। A বচনের আবর্তনে হেতুবাক্য A বচন ও সিদ্ধান্ত I বচন সমার্থক (equivalent) নয়। যেমন–
সকল মানুষ হয় মরণশীল (A)
∴ কোনো কোনো মরণশীল জীব হয় মানুষ (I)।
সরল আবর্তনে আবর্তিত বচনকে আবর্তন করলে মূল বচনটি পাওয়া যায়। যেমন–

E বচনের আবর্তনে

(১) কোনো মানুষ নয় চতুষ্পদ জীব (E)-আবর্তনীয়-মূল বচন।
(২) কোনো চতুষ্পদ জীব নয় মানুষ (E)-১নং এর আবর্তিত।
৩) কোনো মানুষ নয় চতুষ্পদ জীব (E)-২নং এর আবর্তিত।
এখানে ৩নং বচন ও ১নং মূল বচন অভিন্ন। একইভাবে, I বচনের ক্ষেত্রে আবর্তিত বচনকে আবর্তন করলে মূল বচনটি পাওয়া যায়।
অপরপক্ষে, অ-সরল আবর্তনে আবর্তনীয় বচনকে আবর্তন করলে মূল বচনটি পাওয়া যায় না। বিষয়টি একটি উদাহরণের সাহায্যে বোঝা যাক-

A বচনের আবর্তনে

(১) সকল মানুষ হয় মরণশীল (A)-আবর্তনীয় – মূল বচন।
(২) কোনো কোনো মরণশীল জীব হয় মানুষ (1) ১নং এর আবর্তিত।
৩) কোনো কোনো মানুষ হয় মরণশীল জীব (I) ২নং এর আবর্তিত।
এখানে আবর্তিত বচনটিকে (২নং) পুনরায় আবর্তন করে (৩নং) মূল বচনটি (১নং) পাওয়া গেল না। ৩নং বচন এবং ১নং মূল বচন দুটি ভিন্ন। এর থেকে সুস্পষ্ট হয় যে, অ-সরল আবর্তনে হেতুবাক্য ও সিদ্ধান্ত সমার্থক নয়।

Leave a Comment