আবর্তন কাকে বলে? উদাহরণসহ আবর্তনের নিয়মগুলি ব্যাখ্যা করো। |
আবর্তন:
যে অমাধ্যম যুক্তিতে (Immediate Inference) হেতুবাক্যের (Premise) উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদ যথাক্রমে সিদ্ধান্তের বিধেয় ও উদ্দেশ্য পদ হয় এবং হেতুবাক্যের ও সিদ্ধান্তের গুণের (quality) কোনো পরিবর্তন হয় না এবং উভয়ের অর্থেরও কোনো পরিবর্তন হয় না, সেই অমাধ্যম যুক্তিকে আবর্তন (conversion) বলে। যে বচন থেকে সিদ্ধান্ত নিঃসৃত হয় সেই বচনকে বলে আবর্তনীয় (convertend) আর যে সিদ্ধান্ত ওই আবর্তনীয় বচন থেকে নিঃসৃত হয়, সেই বচনকে বলে আবর্তিত (converse)। যেমন–
সকল মানুষ হয় মরণশীল জীব (A)-আবর্তনীয়।
∴ কোনো কোনো মরণশীল জীব হয় মানুষ (I)-আবর্তিত।
আবর্তনের নিয়মগুলি হল :
(১) আবর্তনীয় বচনের উদ্দেশ্য পদ আবর্তিত বচনের বিধেয় পদ হবে।
(২) আবর্তনীয় বচনের বিধেয় পদ আবর্তিত বচনের উদ্দেশ্য পদ হবে।
(৩) আবর্তনীয় এবং আবর্তিত-দুটি বচনের গুণ এক হবে। অর্থাৎ আবর্তনীয় বচনটি যদি সদর্থক হয়, আবর্তিত বচনটিও সদর্থক হবে, অপরপক্ষে আবর্তনীয় বচনটি যদি নঞর্থক হয়, আবর্তিত বচনটিও নঞর্থক হবে।
(৪) আবর্তনীয় এবং আবর্তিত-দুটি বচনের পরিমাণ ভিন্ন হতে পারে। অর্থাৎ আবর্তনীয় বচনের পরিমাণ যে একই হবে, এমন কোনো কথা নেই। আবর্তনীয় বচনের পরিমাণ সামান্য (Universal) হলে, আবর্তিত বচনের পরিমাণ সামান্য হতে পারে আবার বিশেষ (Particular)-ও হতে পারে।
(৫) যে পদ আবর্তনীয় বচনে ব্যাপ্য হয়নি, সেই পদ আবর্তিত বচনে ব্যাপ্য হতে পারবে না। এই নিয়মটিকে বলা হয় আবর্তনের ব্যাপ্যতার নিয়ম।
উপরোক্ত উদাহরণটি আলোচনা করলে নিয়মগুলি ভালোভাবে বোঝা যাবে। দৃষ্টান্তটিতে আবর্তনীয় বচনের উদ্দেশ্য পদ (মানুষ) আবর্তিত বচনের বিধেয় পদ হয়েছে, আবর্তনীয় বচনের বিধেয় পদ (মরণশীল জীব) আবর্তিত বচনের উদ্দেশ্য পদ হয়েছে। আবর্তনীয় (A বচন) ও আবর্তিত (Ⅰ বচন) -দুটি বচনই সদর্থক বচন, অর্থাৎ বচন দুটিতে গুণের কোনো পার্থক্য নেই এবং আবর্তিত বচনে (1) কোনো পদই ব্যাপ্য হয়নি, কাজেই আবর্তনীয় বচনে কোনো পদ ব্যাপ্য হয়েছে কি না সেই প্রশ্নটিই ওঠে না। কাজেই ‘A’ এই আবর্তনীয় বচনটির আবর্তিত রূপটি হল ‘I’ বচন।