বচন কাকে বলে? বচনের বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো। |
বচন:
যুক্তির অবয়বরূপে ব্যবহৃত যে ঘোষক বাক্যে দুটি পদের মধ্যে সম্বন্ধকে স্বীকার বা অস্বীকার করা হয়, যা সত্য অথবা মিথ্যা হতে পারে, সেই বিবৃতিমূলক বাক্য বা ঘোষক বাক্যকে বচন বলে। যেমন- সকল মানুষ হয় মরণশীল।
বচনের বৈশিষ্ট্য:
বচনের কতকগুলি মৌলিক বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়। এই বৈশিষ্ট্যগুলি হল নিম্নরূপ–
(১) উৎস: বচনের মূল উৎস হল বাক্য। তবে যে-কোনো বাক্যই বচন নয়, একমাত্র ঘোষক বাক্যই বচনে পরিণত হতে পারে (যে বচনে উদ্দেশ্য সম্পর্কে বিধেয়তে কোনো কিছু সদর্থক বা নঞর্থকভাবে ঘোষণা করা হয়, তাকেই বলা হয় ঘোষক বাক্য।
(২) গঠন: প্রতিটি বচন চারটি অংশ নিয়ে গঠিত হয়। এই অংশগুলি হল- পরিমাণক, উদ্দেশ্য, বিধেয় ও সংযোজক।
(৩) আকার: প্রতিটি বচনের নির্দিষ্ট আকার আছে। যেমন- সকল মানুষ হয় স্বার্থপর (A)- বচনটির আকার হল সকল S হয় P।
(৪) সত্যতা-মিথ্যাত্ব প্রতিটি বচন সত্য অথবা মিথ্যা হবে। অবরোহ অনুমানে প্রধানত আকারগত সত্যতা এবং আরোহ অনুমানে আকারগত ও বস্তুগত উভয় প্রকার সত্যতার দিকে লক্ষ রাখা হয়।
(৫) মর্যাদাগত ব্যাখ্যা: সমস্ত বচনই বাক্যের মর্যাদা পেতে পারে কিন্তু সমস্ত বাক্য বচন হতে পারে না, একমাত্র ঘোষক বাক্য বচনের মর্যাদা পেতে পারে।
(৬) কালের গুরুত্ব: বচন অতীত ও ভবিষ্যৎ কালের হয় না। প্রতিটি বচন কেবল বর্তমান কালের হয়।
(৭) নঞর্থক চিহ্নের ব্যবহার : যুক্তিবিজ্ঞানসম্মত বচনে নঞর্থক চিহ্নটি সংযোজকের অংশরূপে গণ্য হয়।
(৮) গুণ ও পরিমাণের গুরুত্ব: প্রতিটি বচনে অবশ্যই গুণ ও পরিমাণ উল্লেখ করতে হয়। যেমন- কোনো পাখি নয় পশু- এই বচনটির গুণ নঞর্থক এবং পরিমাণ সামান্য।
(৯) উপস্থাপন : বচনের অন্তর্গত অংশগুলি নিজের ইচ্ছামতো ব্যবহার করা যায় না। সেগুলিকে যুক্তিবিজ্ঞানের নিয়ম অনুসারে ১৯৯৯ সাজাতে হয়।
(১০) যুক্তির অবয়ব : যুক্তি গঠিত হয় বচনের সমন্বয়ে, অর্থাৎ বচন যুক্তির অবয়ব হিসেবে ব্যবহৃত হয়।