Bolpur High School
বিভাগ ক
(i) উত্তর গোলার্ধে বৃহত্তম রাত্রি ও ক্ষুদ্রতম দিন হল (c) 22 ডিসেম্বর।
(ii) কলকাতা ও গ্রিনিচের মধ্যে প্রমাণ সময়ের পার্থক্য (c) 5 ঘণ্টা 30 মিনিট।
(iii) ম্যাগমার ঊর্ধ্বমুখী প্রবাহকে বলে – . (b) প্লিউম।
(iv) ধসের বিপর্যয় বেশি দেখা যায় – (c) দার্জিলিং পার্বত্য অঞ্চলে।
(v) শল্কমোচন প্রক্রিয়া দেখা যায়। (c) উম্বু মরু অঞ্চলে
(vi) সর্বাপেক্ষা নিকৃষ্ট শ্রেণির কয়লা হল – (c) পিট।
(vii) উত্তরবঙ্গের ‘ত্রাসের নদী’ হল – (b) তিস্তা।
(viii) প্রদত্ত যেটি প্রশান্ত মহাসাগরীয় আগ্নেয় মেখলার অন্তর্গত – (b) ফুজিয়ামা।
(ix) বিশ্ব বাজারে খনিজ তেলের দাম নিয়ন্ত্রণ করে (b) OPECI
(x) মহাসাগরীয় প্লেট যে প্রকার শিলা দিয়ে তৈরি তা হল (d) ব্যাসল্ট।
(xi) উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রবেশদ্বার হল (a) শিলিগুড়ি।
(xii) এক ধরনের জলবায়ুগত বিপর্যয়ের নাম – (d) ঘূর্ণিঝড়।
(xiii) একটি ক্ষুদ্র স্কেলের মানচিত্রের উদাহরণ হল (b) অ্যাটলাস মানচিত্র।
(xiv) 16 ইঞ্চিতে 1 মাইল যে স্কেলে আঁকা যায় (a) মৌজা মানচিত্র।
বিভাগ – খ
2 (i) বিন্ধ্য ও সাতপুরা পর্বতের মাঝে তাপ্তি নদী উপত্যকা অবস্থিত। ভুল
(ii) ‘ভূমধ্যসাগরীয় আলোকস্তম্ভ’ বলা হয় ফুজিয়ামাকে। ভুল
(iii) সকল প্রকার দুর্যোগই হল বিপর্যয়। ভুল
(iv) পশ্চিমবঙ্গের শীতকালীন ঝড়বৃষ্টিকে পশ্চিমি ঝঞ্ঝা বলে। ঠিক
(v) মৃত্তিকা সৃষ্টির প্রাথমিক উপাদান হল রেগোলিথ। ঠিক
(vi) অরোরা অস্ট্রালিস দেখা যায় উত্তর মেরু অঞ্চলে। ভুল
(vii) সকল দ্রাঘিমাই অর্ধবৃত্ত হয়। ঠিক
(B) (i) 20° পূর্ব দ্রাঘিমার প্রতিপাদ স্থানের দ্রাঘিমার মান হবে 160° পশ্চিম।
(ii) মানুষের উদ্ভাবনী ক্ষমতা একধরনের মানবিক সম্পদ।
(iii) পশ্চিমবঙ্গের ‘হলদিরাম ভুজিয়া’ একটি খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের উদাহরণ।
(iv) ভারতের বেশিরভাগ কয়লা বিটুমিনাস শ্রেণির।
(v) উত্তর মেরুতে ধ্রুবতারার উন্নতি কোণ হয় 90 ডিগ্রি।
(vi) পৃথিবীর ‘যমজ ভাই’ হল শুক্র গ্রহ।
(vii) জনঘনত্বের বিচারে পশ্চিমবঙ্গ ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজ্য।
C. (i) পৃথিবীর আবর্তন (c) কোরিওলিস বল
(ii) ভারতের বৃহত্তম তৈল শোধনাগার (d) জামনগর
(iii) ক্ষয়ীভবন (b) গতিশীল প্রক্রিয়া
(iv) সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (a) দেরাদুন
(D) (i) স্তুপ পর্বত সৃষ্টির জন্য মহীভাবক আলোড়ন দায়ী।
(ii) ভারতের প্রমাণ দ্রাঘিমার মান 82°30 ।
(iii) মানচিত্র সম্বলিত পুস্তককে অ্যাটলাস বলে।
(iv) দ্বারকেশ্বর ও শিলাবতীর মিলিত প্রবাহ রূপনারায়ণ নামে পরিচিত।
(v) ‘ভূমিকম্পের দেশ’ বলা হয় জাপানকে।
(vi) বীরভূম জেলা বর্ধমান প্রশাসনিক বিভাগের অন্তর্ভুক্ত।
(vii) জমির মালিকানা ‘মৌজা’ বা ক্যাডাস্ট্রাল’ মানচিত্র দ্বারা চিহ্নিত করা হয়।
বিভাগ গ
(i) মহাবিষুব (Vernal Equinox) : Baghbazar Multipurpose Girls’ School (Govt Spons)-এর 3. (i)-এর অথবা-র উত্তরটি দ্যাখো।
অথবা, অরোরা বা মেরুপ্রভা (Aurora) : পৃথিবীর উভয় মেরু অঞ্চলে ছয়মাস রাত্রি চলাকালীন সেখানকার বায়ুমণ্ডলে যে বর্ণময় আলোকছটার সৃষ্টি হয়, তাকে মেরুপ্রভা বা মেরুজ্যোতি বলে।
সৃষ্টি বায়ুমণ্ডলের আয়নোস্ফিয়ারে বিভিন্ন গ্যাসীয় উপাদান (অক্সিজেন, নাইট্রোজেন) ) অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবে আয়নিত হয়ে (ধনাত্মক ও ঋণাত্মক) লাল, সবুজ, বেগুনি মেরুজ্যোতির সৃষ্টি করে।
শ্রেণিবিভাগ : উভয় মেরু অঞ্চলে নিম্নোক্ত দু-ধরনের মেরুজ্যোতির সৃষ্টি হয় –
সুমেরুপ্রভা (Aurora Borealis) : 23 সেপ্টেম্বর থেকে 21 মার্চ পর্যন্ত উত্তর মেরুতে যে মেরুজ্যোতির সৃষ্টি হয়, তাকে সুমেরুপ্রভা বলে।
কুমেরুপ্রভা (Aurora Australis) : 21 মাৰ্চ থেকে 23 সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দক্ষিণ মেরুতে যে মেরুজ্যোতির সৃষ্টি হয়, তাকে কুমেরুপ্রভা বলে।
(ii) প্রমাণ সময় (Standard Time ) : পৃথিবীর একই দ্রাঘিমারেখায় অবস্থিত স্থানগুলির স্থানীয় সময় এক হলেও 1° দ্রাঘিমার পার্থক্যে 4 মিনিট সময়ের পার্থক্য ঘটে। ফলে কোনো দেশে বহুসংখ্যক দ্রাঘিমারেখার উপস্থিতির দরুণ বিভিন্ন স্থানীয় সময় থাকলে রেল, ডাক, বেতার এবং প্রশাসনিক কাজ চালানো অসুবিধাজনক হয়ে পড়বে। এই অসুবিধা যাতে না হয়, সেজন্য কোনো দেশের প্রায় মধ্যাঞ্চল দিয়ে উত্তর-দক্ষিণে প্রসারিত দ্রাঘিমাকে প্রমাণ দ্রাঘিমা ধরা হয় এবং এই দ্রাঘিমার ওপর নির্ভর করে যখন দেশের বা ওই ভূখণ্ডের সময় নির্ণীত হয়, তখন তাকে ওই দেশ বা ভূখণ্ডের প্রমাণ সময় বলে।
উদাহরণ : ভারতের প্রায় মাঝামাঝি স্থানে এলাহাবাদের কাছে অবস্থিত 82°30′ পূর্ব দ্রাঘিমারেখার স্থানীয় সময়কে ভারতের প্রমাণ সময় হিসেবে ধরা হয়।
অথবা, পৃথিবীর পরিক্রমণ গতি : যে গতিতে পৃথিবী সূর্যকে প্রায় মাঝখানে রেখে উপবৃত্তাকার পথে নির্দিষ্ট বেগে (সেকেন্ডে প্রায় 30 কিমি) পশ্চিম থেকে পূর্বে সূর্যের চারদিকে ঘুরছে, তাকে পরিক্রমণ গতি বলে। সূর্যের চারদিকে এক পাক ঘুরতে সময় লাগে 365 দিন 5 ঘণ্টা 48 মিনিট 46 সেকেন্ড বা 365 দিন 6 ঘণ্টা বা এক বছর। তাই এই গতির আর এক নাম বার্ষিক গতি। এই গতির প্রভাবে দিন-রাত্রির হ্রাস-বৃদ্ধি ও ঋতু পরিবর্তন হয়।
(ii) সম্পদ সৃষ্টির উপাদান : সম্পদ সৃষ্টির উপাদান তিনটি, যথা— প্রকৃতি, ও মানুষ ও ও সংস্কৃতি। এই তিনটি উপাদানের পারস্পরিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ায় কোনো বস্তু বা অবস্তু সম্পদে পরিণত হয়।
প্রকৃতির ভূমিকা : প্রকৃতি হল সম্পদের আধার। সমস্ত সম্পদই প্রকৃতিতে নিরপেক্ষ উপাদানরূপে বিরাজ করে এবং তা মানুষের হস্তক্ষেপে ও সংস্কৃতির সাহায্যে সম্পদে পরিণত হয়। যেমন- সূর্যালোক, খনিজ দ্রব্য, অরণ্য প্রভৃতি।
মানুষের ভূমিকা : মানুষই সম্পদের সৃষ্টিকর্তা এবং মানুষই সম্পদের পরিণতি। সম্পদের দৃষ্টিকোণ থেকে মানুষের ভূমিকা তিন ধরনের। যথা— (a) উৎপাদকরূপে, (b) ভোগকর্তারূপে এবং (c) ধ্বংসকর্তারূপে।
সংস্কৃতির ভূমিকা : মানুষের সভ্যতার উৎকৃষ্টতাকে সংস্কৃতি বলে। সংস্কৃতির উপাদান দুই প্রকার। যথা বস্তুগত যন্ত্রপাতি, বইপত্র প্রভৃতি) এবং অবস্তুগত (শিক্ষা, জ্ঞান, বুদ্ধি, দক্ষতা প্রভৃতি)। এই দুই সাংস্কৃতিক উপাদানের সাহায্যে মানুষ প্রকৃতির বাধা অপসারণ করে নিরপেক্ষ উপাদানগুলিকে সম্পদে পরিণত করে।
অথবা, সম্পদ (Resource) : Baghbazar Multipurpose Girls’ School (Govt Spons)-এর 3. (v)-এর উত্তরটি দ্যাখো।
(iv) আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ (Crater) : আগ্নেয়গিরি বা আগ্নেয় পর্বতের চূড়ায় যে মুখ বা গহ্বর থাকে, যার মধ্য দিয়ে অগ্ন্যুদ্গম রূপে জ্বলন্ত লাভা, গ্যাস, ছাই ইত্যাদি বাইরে বেরিয়ে আসে, তাকে জ্বালামুখ বলে। জ্বালামুখের ব্যাস কয়েক মিটার থেকে কয়েক কিলোমিটার হতে পারে। একটি আগ্নেয়গিরিতে কখনো কখনো একাধিক জ্বালামুখও (একটি প্রধান অন্যগুলি অপ্রধান) থাকতে পারে।
অথবা, ম্যাগমা ও লাভা (Magma and Lava) : বিভিন্ন প্রকার খনিজ যখন উত্তপ্ত তরল এবং সম্মিলিত অবস্থায় ভূগর্ভে অবস্থান করে, তখন তাকে ম্যাগমা বলে। আবার ভূআলোড়নের দ্বারা ভূত্বকের ফাটলের মধ্যে দিয়ে বা অগ্ন্যুৎপাতের মাধ্যমে এই ম্যাগমা যখন ভূপৃষ্ঠে বেরিয়ে আসে, তখন তাকে লাভা বলে।
(v) দুর্যোগ (Hazard) : Balurghat High School-এর 3. (iv)-এর অথবা-র উত্তরটি দ্যাখো।
অথবা, বিপর্যয় (Disaster) : Disaster কথাটি ফরাসি শব্দ ‘Des’ বা অশুভ এবং ‘Aster’ বা নক্ষত্র-এর মিলনে সৃষ্ট। অর্থাৎ মানবজীবনে অমঙ্গল ঘটলেই তা হবে বিপর্যয়। দ্রুত ও আকস্মিক ঘটনার প্রভাবে বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে প্রাকৃতিক পরিবর্তনহেতু সম্পদ ধ্বংস (প্রচুর), অসংখ্য মানুষের মৃত্যু এবং ক্ষয়ক্ষতি পূরণ প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়লে, সেই ভয়ংকর অবস্থা বিপর্যয় নামে পরিচিত। অর্থাৎ, দুর্যোগের ভয়ংকর রূপকে বিপর্যয় বলে।
উদাহরণ : উত্তরাখণ্ডের সাম্প্রতিক হড়পা বান ও তার ফলে সৃষ্ট ধস, নেপালের ভূমিকম্প ইত্যাদির প্রভাবে শতাধিক মানুষের মৃত্যু, স্থাপত্য ধ্বংস, জনজীবন বিপর্যস্ত প্রভৃতি হল বিপর্যয়ের উদাহরণ।
(vi) রৈখিক দূরত্ব (Linear Distance) : কোনো সমতল জায়গায় দুটি স্থানের দূরত্ব সোজাসুজি ফিতে বা দড়ি দিয়ে মাপার পর ওই মাপটিকে সেন্টিমিটার, মিটার, কিলোমিটার ইত্যাদির মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। এইভাবে দূরত্ব প্রকাশ করাকে রৈখিক দূরত্ব বলে।
অথবা, am ও pm : পৃথিবীর আবর্তন গতির ফলে কোনো দ্রাঘিমারেখা যখন সূর্যের সামনে আসে তখন সূর্যকে সেই স্থানের মধ্যাকাশে দেখা যায় এবং তখন সেখানকার স্থানীয় সময় হয় মধ্যাহ্ন বা বেলা 12টা। বিপরীত দ্রাঘিমারেখায় তখন সময় হয় মধ্যরাত্রি বা রাত্রি 12টা। অর্থাৎ, কোনো জায়গায় মধ্যরাত্রি 12টার পর থেকে পরদিন মধ্যাহ্ন অর্থাৎ দুপুর 12টার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত সময়কে Ante (Before) Meridian বা am এবং মধ্যাহ্ন বা দুপুর 12টার পর থেকে মধ্যরাত্রি 12টার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত সময়কে Post (After) Meridian বা pm বলে। অর্থাৎ, কোনো জায়গার দ্রাঘিমা বা Meridian-এর উপর সূর্য পৌঁছানোর আগের সময় বোঝাতে Ante Meridian এবং সূর্য পৌঁছানোর পরের সময় বোঝাতে Post Meridian ব্যবহার করা হয়। আর রাত্রি 12 টা এবং দুপুর 12 টাকে am বা pm না বলে যথাক্রমে মধ্যরাত্রি 12 টা এবং মধ্যাহ্ন 12 টা বলা হয়ে থাকে।
বিভাগ – ঘ
4 (i) ভূমিকম্পের কেন্দ্র ও উপকেন্দ্র :
কেন্দ্র (Focus) : ভূপৃষ্ঠের নীচে ভূঅভ্যন্তরে যে স্থান বলে ভূমিকম্পের থেকে ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়, তাকে কেন্দ্র।
বৈশিষ্ট্য : ভূমিকম্পের কেন্দ্র কোনো নির্দিষ্ট বিন্দুতে অবস্থান করে না। এটির বিস্তার বেশ কিছুটা জায়গা জুড়ে হয়। অধিকাংশ ভূমিকম্পের কেন্দ্র ভূপৃষ্ঠ থেকে 50 – 100 কিমি গভীরে অবস্থান করে।
উপকেন্দ্র (Epicentre ) : ভূমিকম্প কেন্দ্র থেকে ঠিক উল্লম্ব দিকে অর্থাৎ, সমকোণে অবস্থিত ভূপৃষ্ঠের যেস্থানে প্রথম কম্পন পৌঁছায়, তাকে ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র বলে।
বৈশিষ্ট্য : এখানেই ভূমিকম্পের তীব্রতা সবচেয়ে বেশি অনুভূত হয়। উপকেন্দ্র থেকে চারদিকে তীব্রতা ক্রমশ কমতে থাকে।
অথবা, আবহবিকার (Weathering) : আবহাওয়ার অন্তর্গত বিভিন্ন উপাদান (উয়তা, বৃষ্টিপাত, বায়ুপ্রবাহ, বায়ুমণ্ডলীয় অক্সিজেন, কার্বন ডাইঅক্সাইড প্রভৃতি) দ্বারা যান্ত্রিকভাবে ভূপৃষ্ঠস্থ শিলার বিচূর্ণীকরণ কিংবা রাসায়নিকভাবে বিয়োজনকে আবহবিকার বলা হয়।
বৈশিষ্ট্য : আবহবিকারে ভূপৃষ্ঠস্থ শিলা বিচূর্ণীকৃত বা বিয়োজিত হয়। বিচূর্ণীকৃত বা বিয়োজিত পদার্থগুলি মূল শিলার কাছাকাছি পড়ে থাকে।
প্রকারভেদ : আবহবিকার মূলত তিন প্রকার– যান্ত্রিক আবহবিকার, রাসায়নিক আবহবিকার, ও জৈবিক আবহবিকার।
(ii) বিপর্যয় মোকাবিলার উপায়সমূহ : Bankura Christian Collegiate School-এর 4. (iii)-এর উত্তরটি দ্যাখো।
অথবা, ‘সব দুর্যোগ বিপর্যয় নাও হতে পারে’ – ব্যাখ্যা : প্রাকৃতিক ও মানবিক কারণে সংঘটিত যে-সকল ঘটনা মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় বিঘ্ন ঘটায় ও পরিবেশের ক্ষতি করে তাকে দুর্যোগ বলে। যেমন— – ভূমিকম্প, বন্যা, ঘূর্ণিঝড় প্রভৃতি। এই সকল দুর্যোগ যখন ব্যাপক হারে জীবন ও সম্পত্তিহানি ঘটায় তখন তা বিপর্যয়ে পরিণত হয়। অর্থাৎ, বিপর্যয় ঘটার পূর্বে দুর্যোগ ঘটা আবশ্যিক। দুর্যোগের পথ ধরেই বিপর্যয় আসে। যেমন— সমুদ্রের মাঝে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় হল দুর্যোগ। এই ঘূর্ণিঝড় যখন উপকূলে প্রবল গতিতে আছড়ে পড়ে ব্যাপক হারে জীবন ও সম্পত্তিহানি করে তখন তা বিপর্যয়ে পরিণত হয়। তবে সব দুর্যোগ বিপর্যয়ে পরিণত হয় না। যেমন— সমুদ্রের মাঝে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ উপকূলের কাছে এসে যদি খুব কমে যায় তাহলে তা বিপর্যয় সৃষ্টি করে না। এ ছাড়া জনশূন্য পার্বত্য অঞ্চলের সৃষ্ট ধস বা হিমানী সম্প্রপাত, জনমানবহীন শীতল মেরুতে সৃষ্ট তুষার ঝড় দুর্যোগ হলেও বিপর্যয় নয়। কারণ এগুলি মানুষের জীবনহানি ঘটায় না বা স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে স্তব্ধ করে দেয় না। তাই বলা যায় “সব বিপর্যয়ই দুর্যোগ, কিন্তু সব দুর্যোগ বিপর্যয় নয়”।
(iii) পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসনিক বিভাগসমূহ : প্ৰশাসনিক কাজকর্মের সুবিধার জন্য পশ্চিমবঙ্গের জেলাগুলিকে 5টি বিভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা- প্রেসিডেন্সি বিভাগ, বর্ধমান বিভাগ, জলপাইগুড়ি বিভাগ, মালদা বিভাগ ও মেদিনীপুর বিভাগ।
অথবা, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প (Food Processing Industry) : Bankura Christian Collegiate School-এর 3. (v)-এর অথবা-র উত্তরটি দ্যাখো।
উদাহরণ : মাছ ও মাংস প্রক্রিয়াকরণ, জ্যাম, জেলি, জুস, আচার তৈরি ইত্যাদি।
(iv) সম্পদ সংরক্ষণ : অধ্যাপক জিমারম্যানের মতে, আগামী প্রজন্মের জন্য বর্তমান প্রজন্মের ভোগের নিয়ন্ত্রণকে সংরক্ষণ বলে। এই অনুসারে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের চাহিদা পূরণ ও দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়নের উদ্দেশ্যে সম্পদকে মিতব্যয়ীভাবে, যথোপযুক্তভাবে ও বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে ব্যবহার করাকে সম্পদ সংরক্ষণ বলে। এর উদ্দেশ্যগুলি হল- সম্পদের যথেচ্ছ ব্যবহার বন্ধ করে তাকে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা। ও ভবিষ্যতে মানুষের সুবিধার জন্যে বর্তমানে ত্যাগ স্বীকার করা। এর ফলে বহু সংখ্যক মানুষের চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে। গসম্পদের স্থায়িত্ব বাড়ানোর উ উদ্দেশ্যে অপচয় নিবারণ করে সম্পদ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা। সম্পদের দ্রুত উৎপাদন এবং অতি ব্যবহার কমিয়ে তাকে সংরক্ষণ করা। পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখা ও প্রাকৃতিক সম্পদগুলিকে তাদের নিজস্ব পরিবেশে রক্ষা করার জন্যও সম্পদ সংরক্ষণ জরুরি।
সম্পদ সংরক্ষণের উপায় : আধুনিক যুগে নানারকম বিচার বিশ্লেষণ এবং পরীক্ষানিরীক্ষার পর সম্পদ সংরক্ষণের নানান উপায় বা পদ্ধতি আবিষ্কৃত হয়েছে সেগুলি নিম্নরূপ
সম্পদের অতিব্যবহার কমানো : সম্পদকে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করতে হলে সম্পদের অতিব্যবহার কমানো দরকার। ইউরোপ ও আমেরিকার মতো উন্নত দেশগুলিতে মাথাপিছু ধাতব ও শক্তিসম্পদের ব্যবহার খুব বেশি। এই ব্যবহারের পরিমাণ যথোপযুক্ত হলে সঞ্জিত সম্পদ আরও দীর্ঘস্থায়ী হবে।
দ্রব্যের রূপান্তর ঘটিয়ে ব্যবহার : কোনো কোনো দ্রব্যকে সরাসরি ব্যবহার না করে রূপান্তর ঘটিয়ে তাদের ব্যবহার করলে কম জিনিস থেকে বেশি উপযোগিতা পাওয়া যায়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কয়লা অথবা খনিজ তেল সরাসরি ব্যবহার করলে যেখানে বেশি খরচ হয় সেখানে বিদ্যুৎ তৈরি করে ব্যবহার করলে খরচ অনেক কম হয়। ফলে সম্পদের সাশ্রয় হয়ে থাকে।
অপচয় বন্ধ করা : সম্পদ আহরণের সময় একটা বড়ো অংশ প্রথমেই নষ্ট হয়ে যায়। অরণ্য থেকে কাষ্ঠ আহরণের সময় একটা বড়ো অংশ বনে পড়ে থাকে এবং পরিবহণের সময় নষ্ট হয়। এছাড়া, লৌহ আকরিক, কয়লা ইত্যাদি খনিজ সম্পদ উত্তোলনের সময় তাদের বেশ কিছু অংশ ধুলোয় পরিণত হয়ে নষ্ট হয়। এভাবে সম্পদ যাতে নষ্ট না হয় তার দিকে লক্ষ রাখা উচিত।
উৎপাদন এবং ভোগের মধ্যে সমতা : সম্পদের উৎপাদন এবং ভোগের মধ্যে সমতা রক্ষা করা দরকার। যে-কোনো সম্পদের ক্ষেত্রে উৎপাদন এবং ভোগের মধ্যে সমতা না থাকলে ক্রমশ ওই সম্পদ নিঃশেষিত হবে। পৃথিবীর কোনো কোনো অঞ্চলে কাষ্ঠের উৎপাদন এবং ভোগের মধ্যে সমতা না থাকার দরুন বহু বনভূমি নিশ্চিহ্ন হয়েছে।
জৈব সম্পদের উৎপাদন বৃদ্ধি : জৈব সম্পদ অর্থাৎ, স্বাভাবিক উদ্ভিদ এবং প্রাণীকুলের মোট উৎপাদন বৃদ্ধির ব্যবস্থা করা সম্ভব হলে সম্পদের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। অরণ্য সৃষ্টি করে, কৃষি ব্যবস্থা ও পশুপালনের প্রসার ঘটিয়ে এবং সামুদ্রিক জৈব সম্পদের উৎপাদন বাড়িয়ে সম্পদের উৎপাদন বৃদ্ধি করা যায়।