বিবর্তন কাকে বলে? উদাহরণসহ নিরপেক্ষ বচনগুলির বিবর্তন লেখো

বিবর্তন কাকে বলে? উদাহরণসহ নিরপেক্ষ বচনগুলির বিবর্তন লেখো

বিবর্তন কাকে বলে? উদাহরণসহ নিরপেক্ষ বচনগুলির বিবর্তন লেখো।
বিবর্তন কাকে বলে? উদাহরণসহ নিরপেক্ষ বচনগুলির বিবর্তন লেখো।

বিবর্তন:

যে অমাধ্যম অনুমানে হেতুবাক্যের উদ্দেশ্যকে সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্যরূপে ও হেতুবাক্যের বিধেয়ের বিরুদ্ধ পদকে সিদ্ধান্তের বিধেয়রূপে গ্রহণ করে, গুণের পরিবর্তন ঘটিয়ে নতুন বচন লাভ করা যায়, সেই অমাধ্যম অনুমানকে বিবর্তন (obversion) বলে।
বিবর্তনে হেতুবাক্যকে বিবর্তনীয় (obvertend) আর সিদ্ধান্তকে বলে বিবর্তিত (obverse)। যাকে বিবর্তন করতে হবে তা হল বিবর্তনীয় আর বিবর্তনক্রিয়ার ফল হল বিবর্তিত।

A বচনের বিবর্তন:

A বচনের বিবর্তিত রূপ হবে E বচন।

সকল মানুষ হয় মরণশীল (A)-বিবর্তনীয়।
∴ কোনো মানুষ নয় অ-মরণশীল (E)-বিবর্তিত।
এখানে বিবর্তনের নিয়মানুযায়ী ‘মানুষ’ পদটি হেতুবাক্য ও সিদ্ধান্তে উদ্দেশ্য হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। অর্থাৎ হেতুবাক্য ও সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য অভিন্ন হয়েছে। বিবর্তনীয় বচনের বিধেয়ের বিরুদ্ধ পদটি (অ-মরণশীল)-কে বিবর্তিত বচনের বিধেয় হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। হেতুবাক্য ও সিদ্ধান্তের গুণের পরিবর্তন হয়েছে, কারণ ‘A’ হল সদর্থক বচন এবং ‘E’ হল নঞর্থক বচন। হেতুবাক্য ও সিদ্ধান্তের পরিমাণও একই আছে। কেন-না, A এবং E-দুটি বচনই সামান্য বচন। সুতরাং, A বচনের বিবর্তিত রূপ E বচন।

‘E’ বচনের বিবর্তন:

E বচনের বিবর্তিত রূপ হবে A বচন।

কোনো মানুষ নয় সৎ (E)-বিবর্তনীয়।
∴ সকল মানুষ হয় অ-সৎ (A)-বিবর্তিত।
এখানে হেতুবাক্য ও সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য (মানুষ) অভিন্ন। গুণের দিক থেকে হেতুবাক্য নঞর্থক বচন, কিন্তু সিদ্ধান্ত সদর্থক বচন, অর্থাৎ গুণের পার্থক্য ঘটেছে। হেতুবাক্যের বিধেয়ের বিরুদ্ধ পদ (অ-সৎ) সিদ্ধান্তের বিধেয় হয়েছে, পরিমাণের দিক থেকে হেতুবাক্য ও সিদ্ধান্ত সামান্য বচন অর্থাৎ পরিমাণের কোনো পার্থক্য ঘটেনি। সুতরাং, E বচনের বিবর্তিত রূপটি হবে A বচন।

‘I’ বচনের বিবর্তন:

‘I’ বচনের বিবর্তিত রূপ হবে বচন।

কোনো কোনো বাঙালি হয় ধনী (I)-বিবর্তনীয়।
∴ কোনো কোনো বাঙালি নয় অ-ধনী (O)-বিবর্তিত।
এক্ষেত্রে বিবর্তনের নিয়মগুলি যথাযথভাবেই অনুসৃত হয়েছে। হেতুবাক্য ও সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য (বাঙালি) অভিন্ন, সিদ্ধান্তের বিধেয় (অ-ধনী) হেতুবাক্যের বিধেয়ের বিরুদ্ধ পদ হয়েছে। হেতুবাক্য ও সিদ্ধান্তের গুণও ভিন্ন, ‘I’ বচন হল সদর্থক বচন এবং ‘০’ বচন হল নঞর্থক বচন এবং হেতুবাক্য ও সিদ্ধান্তের পরিমাণ একই (দুটিই বিশেষ বচন) রয়েছে। সুতরাং, ‘I’ বচনকে বিবর্তিত করলে ‘O’ বচনই হবে।

‘O’ বচনের বিবর্তন:

‘O’ বচনের বিবর্তিত রূপ হবে ‘I’ বচন।

কোনো কোনো মানুষ নয় নিরীহ (O)-বিবর্তনীয়।
∴ কোনো কোনো মানুষ হয় অ-নিরীহ (I)-বিবর্তিত।
এক্ষেত্রে হেতুবাক্য ও সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য (মানুষ) অভিন্ন। সিদ্ধান্তের বিধেয় (অ-নিরীহ) হেতুবাক্যের বিধেয়ের বিরুদ্ধ পদ হয়েছে। হেতুবাক্য (O-নঞর্থক বচন) ও সিদ্ধান্তে (I-সদর্থক বচন) গুণের পার্থক্য ঘটেছে কিন্তু পরিমাণের পার্থক্য ঘটেনি কারণ, হেতুবাক্য ‘০’ এবং সিদ্ধান্ত ‘I’-উভয় বচনই বিশেষ বচন। সুতরাং, ‘O’ বচনের বিবর্তিত রূপ হবে ‘I’ বচন।

Leave a Comment