বাক্য কাকে বলে ? বাক্য সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশ্ন ও উত্তর ।

সূচিপত্র

বাক্য কাকে বলে ? বাক্য সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশ্ন ও উত্তর ।
বাক্য কাকে বলে ? বাক্য সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশ্ন ও উত্তর ।

শব্দ কাকে বলে?

অর্থপূর্ণ ধ্বনিসমষ্টি যা ভাষা তৈরির মূল উপাদান, তাই শব্দ।

পদ কাকে বলে?

শব্দ যখন বিভক্তি ও প্রত্যয় যুক্ত হয়ে থাকে, তখন সেটি পদ রূপে গণ্য হয়।

বাক্য কাকে বলে?

যে পদসমূহের দ্বারা বক্তার মনের ভাব যথাযথ সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ পায়, তাকে বাক্য বলে।

বাক্য নির্মাণ করতে হলে কী কী বিষয়ের ওপর নজর দিতে হয়?

বাক্য নির্মাণ করতে হলে তিনটি বিষয়ের ওপর নজর দিতে হয়, তা হল – আকাঙ্ক্ষা, যোগ্যতা ও আসত্তি।

‘আকাঙ্ক্ষা’ কাকে বলে?

বাক্যের অর্থ সুস্পষ্টভাবে জানতে বক্তার ও শ্রোতার মনের যে ইচ্ছা থাকে, তাকেই বাক্যের আকাঙ্ক্ষা বলে।

‘যোগ্যতা’ কাকে বলে?

বাক্যের অন্তর্গত পদসমূহের অর্থগত ও ভাবগত সংগতি বজায় রাখাই বাক্যের যোগ্যতা।

‘আসত্তি’ কাকে বলে?

অর্থবোধের জন্য বাক্যে পদসমূহের যথাযথভাবে সাজানোকেই আসত্তি বা নৈকট্য বলে।

গঠনগত দিক থেকে বাক্যকে কয় ভাগে ভাগ করা যায় ও কী কী?

গঠনগত দিক থেকে বাক্যকে চার ভাগে ভাগ করা যায় – সরলবাক্য, জটিলবাক্য, যৌগিক বাক্য ও মিশ্র বাক্য।

বাক্যের কটি অংশ ও কী কী?

বাক্যের দুটি অংশ উদ্দেশ্য ও বিধেয়।

বাক্যের উদ্দেশ্য কাকে বলে?

যার উদ্দেশ্যে কিছু বলা হয়, তাকে বাক্যের উদ্দেশ্য বলে।

বিধেয় কাকে বলে?

উদ্দেশ্য সম্পর্কে যা কিছু বলা হয়, তাকে বিধেয় বলে।

সরল বাক্য কাকে বলে?

যে বাক্যে একটি মাত্র উদ্দেশ্য এবং একটি মাত্র বিধেয় থাকে, তাকে সরল বাক্য বলে।

জটিল বাক্য কাকে বলে?

যে বাক্যে একটি প্রধান বাক্য এবং এক বা একাধিক অপ্রধান বাক্য থাকে, তাকে জটিল বাক্য বলে।

যৌগিক বাক্যে কটি প্রধান বাক্য থাকে?

যৌগিক বাক্যে দুটি প্রধান বাক্য থাকে।

যৌগিক বাক্যে প্রধান দুটি বাক্য কীভাবে থাকে?

যৌগিক বাক্যে প্রধান দুটি বাক্য ‘ও’, ‘এবং’, ‘কিন্তু’, ‘সুতরাং’, ‘অথবা’ প্রভৃতি অব্যয় দ্বারা যুক্ত থাকে।

নির্দেশাত্মক বাক্য কাকে বলে?

যে বাক্যে সাধারণভাবে কোনো কিছু বলা হয়, তাকে নির্দেশাত্মক বাক্য বলে।

সদর্থক বাক্য কাকে বলে?

যে বাক্য হ্যাঁ-সূচক অর্থাৎ যে বাক্যে কোনো ঘটনাকে অস্বীকার করা হয় না, তাকে সদর্থক বাক্য বলে।

নঞর্থক বাক্য কাকে বলে?

যে বাক্য না-সূচক অর্থাৎ যে বাক্যে কোনো ঘটনার বিবরণকে অস্বীকার করা হয়, তাকে নঞর্থক বাক্য বলে।

প্রশ্নবাচক বাক্য কাকে বলে?

যে বাক্যের দ্বারা কারও কাছে কিছু বিষয়ে জানতে চাওয়া বোঝায়, তাকে প্রশ্নবাচক বাক্য বলে।

অনুজ্ঞাবাচক বাক্য কাকে বলে?

যে বাক্যের দ্বারা আদেশ, অনুরোধ, নিষেধ প্রভৃতি অর্থ প্রকাশ পায়, তাকে অনুজ্ঞাবাচক বাক্য বলে।

প্রার্থনাবাচক বাক্য কাকে বলে?

যে বাক্যের দ্বারা বক্তার মনের ইচ্ছা, প্রার্থনা প্রকাশ পায়, তাকে প্রার্থনাবাচক বাক্য বলে।

সন্দেহবাচক বাক্য কাকে বলে?

যে বাক্যের দ্বারা বক্তার মনের সন্দেহ, অনুমান, সংশয় ইত্যাদি প্রকাশ পায়, তাকে সন্দেহবাচক বাক্য বলে।

আবেগসূচক বাক্য কাকে বলে?

যে বাক্যের দ্বারা বক্তার মনের আবেগ অর্থাৎ আনন্দ, দুঃখ, বিস্ময়, ঘৃণা, ভয় ইত্যাদি প্রকাশ পায় তাকে আবেগসূচক বাক্য বলে।

শর্তসাপেক্ষ বাক্য কাকে বলে?

যে বাক্যের দ্বারা কোনো শর্ত প্রকাশ পায়, তাকে শর্তসাপেক্ষ বাক্য বলে।

একটি প্রার্থনাসূচক বাক্যের উদাহরণ দাও।

একটি প্রার্থনাসূচক বাক্যের উদাহরণ হল – ‘তুমি দীর্ঘজীবী হও।’

একটি আবেগসূচক বাক্যের উদাহরণ দাও।

একটি আবেগসূচক বাক্যের উদাহরণ হল – ‘আজ কী শীত!’

উদ্দেশ্য কাকে বলে?

যার সম্বন্ধে কিছু বলা হয় তাকে উদ্দেশ্য বলে।

বিধেয় কাকে বলে?

উদ্দেশ্য সম্বন্ধে যা কিছু বলা হয়, তাকে বিধেয় বলে।

সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্য কাকে বলে?

যে বিশেষ পদের দ্বারা কোনো ব্যক্তি, স্থান, নদী, পর্বত, প্রভৃতির নাম বোঝায় তাকে সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্য বলে।

শ্রেণিবাচক বিশেষ্য কাকে বলে?

যে বিশেষ্য পদের দ্বারা কোনো এক শ্রেণির সবাইকে বোঝায়, তাকে শ্রেণিবাচক বিশেষ্য বলে।

ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য কাকে বলে?

যে বিশেষ্য পদের দ্বারা কোনো কাজের নাম বোঝায়, তাকে ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য বলে।

সমষ্টিবাচক বিশেষ্য কাকে বলে?

যে বিশেষ্য পদের দ্বারা কোনো দল, গোষ্ঠী বা সমষ্টির নাম বোঝায়, তাকে সমষ্টিবাচক বিশেষ্য বলে।

মৌলিক ধাতু কাকে বলে?

যেসব ধাতু স্বয়ংসিদ্ধ, যাদের আর বিশ্লেষণ করা যায় না, সেসব ধাতুকে মৌলিক ধাতু বলে।

মৌলিক ক্রিয়া কাকে বলে?

মৌলিক ধাতুর সঙ্গে ধাতু বিভক্তি যোগ করে যে ক্রিয়াপদ পাওয়া যায় তাকে মৌলিক ক্রিয়া বলে।

সাধিত ধাতু কাকে বলে?

যে ধাতুকে বিশ্লেষণ করলে অন্য ধাতু এবং প্রত্যয় পাওয়া যায় তাকে সাধিত ধাতু বলে।

সাধিত ধাতুকে কয় ভাগে ভাগ করা যায় এবং কী কী?

সাধিত ধাতুকে তিন শ্রেণিতে ভাগ করা যায়, তা
হল – প্রযোজক ধাতু, নামধাতু ও ধ্বন্যাত্মক ধাতু।

প্রযোজক ধাতু কাকে বলে?

মৌলিক ধাতুর সঙ্গে ‘আ’ প্রত্যয় যোগ করে যে ধাতু গঠিত হয় এবং গঠিত ধাতুতে কাউকে দিয়ে কিছু করানো অর্থ বোঝায় তাকে প্রযোজক ধাতু বলে।

প্রযোজক ক্রিয়া কাকে বলে?

প্রযোজক ধাতুর সঙ্গে বিভক্তি যোগ করে যে ক্রিয়া গঠিত হয় তাকে প্রযোজক ক্রিয়া বলে।

নামধাতু কাকে বলে?

বিশেষ্য, বিশেষণ এবং ধ্বন্যাত্মক অব্যয় শব্দের শেষে ‘আ’ প্রত্যয় যোগে যে ধাতু পাওয়া যায়, তাকে নামধাতু বলে।

নামধাতুজ ক্রিয়া কাকে বলে?

নামধাতুর সঙ্গে ক্রিয়া বিভক্তি যোগে যে ক্রিয়াপদ পাওয়া যায়, তাকে নামধাতুজ ক্রিয়া বলে।

ধ্বন্যাত্মক ধাতু কাকে বলে?

ধ্বন্যাত্মক শব্দের সঙ্গে ‘আ’ প্রত্যয় যোগ করে যে ধাতু পাওয়া যায়, তাকে ধ্বন্যাত্মক ধাতু বলে।

সাধারণ বর্তমান কাকে বলে?

যে কাজ নিত্য ঘটে থাকে তার কালকে সাধারণ বর্তমান বলে।

পুরাঘটিত বর্তমান কাল কাকে বলে?

যে কাজটি শেষ হয়ে গিয়েছে কিন্তু তার ফল এখনো বর্তমান আছে, তাকে পুরাঘটিত বর্তমান কাল বলে।

ঘটমান অতীত কাল কাকে বলে?

অতীতে যে কাজ কিছু সময় ধরে চলছিল এরূপ বোঝালে তার কালকে ঘটমান অতীত কাল বলে।

সাধারণ ভবিষ্যৎ কাল কাকে বলে?

যে কাজ ভবিষ্যতে ঘটবে তাকে সাধারণ ভবিষ্যৎ কাল বলে।

মৌলিক কাল কাকে বলে?

যে ধাতু অন্য কোনো ধাতুর সাহায্য ছাড়া নিজেই বিভক্তি প্রত্যয় যোগে ক্রিয়াপদ তৈরি করে তার কালকে মৌলিক কাল বলে।

ক্রিয়ার ভাব কাকে বলে?

যে ভাবের দ্বারা সমাপিকা ক্রিয়ার কাজটি কীভাবে ঘটছে, তা বুঝতে পারা যায়, তাকে ‘ক্রিয়ার ভাব’ বলে।

নির্দেশক ভাব কাকে বলে?

সমাপিকা ক্রিয়ার দ্বারা কাজটি যখন সাধারণভাবে নির্দিষ্ট হয় তখন তার ভাবকে বলে নির্দেশক ভাব।

বাক্য কয় প্রকার ও কী কী?

বাক্য চার প্রকার – সরল বাক্য, জটিল বাক্য, যৌগিক বাক্য ও মিশ্র বাক্য।

অনুজ্ঞা ভাব কাকে বলে?

বাক্যে ক্রিয়াপদ যখন বক্তার আদেশ, অনুরোধ, উপদেশ, প্রার্থনা ইত্যাদি প্রকাশ করে; তখন ক্রিয়াপদের সেই ভাবকে অনুজ্ঞা ভাব বলে।

সরল বাক্য কাকে বলে?

যে বাক্যে একটি মাত্র উদ্দেশ্য এবং একটি মাত্র বিধেয় থাকে, তাকে সরল বাক্য বলে।

সরল বাক্যের শর্ত কী?

সরল বাক্যে একটি উদ্দেশ্য, একটি বিধেয় থাকবে, একটি সমাপিকা ক্রিয়া থাকবে এবং এক বা একাধিক অসমাপিকা ক্রিয়াপদ থাকতে পারে।

যৌগিক বাক্য কাকে বলে?

দুই বা ততোধিক প্রধান বাক্য যখন ‘ও’, ‘এবং’, ‘কিন্তু’, ‘অথবা’ ইত্যাদি অব্যয় দ্বারা যুক্ত হয়ে বাক্য তৈরি করে, তখন তাকে যৌগিক বাক্য বলে।

সদর্থক বাক্য কাকে বলে?

যে বাক্য হ্যাঁ-সূচক অর্থাৎ যে বাক্যে কোনো ঘটনার বিবরণকে অস্বীকার করা হয় না, তাকে সদর্থক বাক্য বলে।

নঞর্থক বাক্য কাকে বলে?

যে বাক্য না-সূচক অর্থাৎ যে বাক্যে কোনো ঘটনার বিবরণকে অস্বীকার করা হয়, তাকে নঞর্থক বাক্য বলে।

প্রশ্নবাচক বাক্য কাকে বলে?

যে বাক্যের দ্বারা কারও কাছে কিছু বিষয় জানতে চাওয়া বোঝায়, তাকে প্রশ্নবাচক বাক্য বলে।

অনুজ্ঞাবাচক বাক্য কাকে বলে?

যে বাক্যের দ্বারা আদেশ, অনুরোধ, নিষেধ প্রভৃতি অর্থ প্রকাশ পায়, তাকে অনুজ্ঞাবাচক বাক্য বলে।

প্রার্থনাবাচক বাক্য কাকে বলে?

যে বাক্যের দ্বারা বক্তার মনের ইচ্ছা, প্রার্থনা প্রকাশ * পায়, তাকে প্রার্থনাবাচক বাক্য বলে।

সন্দেহবাচক বাক্য কাকে বলে?

যে বাক্যের দ্বারা বক্তার মনের সন্দেহ, অনুমান, সংশয় ইত্যাদি প্রকাশ পায়, তাকে সন্দেহবাচক বাক্য
বলে।

আবেগসূচক বাক্য কাকে বলে?

যে বাক্যের দ্বারা বক্তার মনের আবেগ অর্থাৎ আনন্দ, দুঃখ, বিস্ময়, ঘৃণা, ভয় ইত্যাদি প্রকাশ পায়, তাকে আবেগসূচক বাক্য বলে।

শর্তসাপেক্ষ বাক্য কাকে বলে?

যে বাক্যের দ্বারা কোনো শর্ত প্রকাশ পায় অর্থাৎ কোনো একটি কাজ অন্য একটি কাজের ওপর নির্ভর করে, তাকে শর্তসাপেক্ষ বাক্য বলে।

‘তুমি না এলে আমি যাব’ – বাক্যটি জটিল বাক্যে লেখো।

জটিল বাক্য যাব।’ ‘যদি তুমি না আস, তবু আমি

‘কোথাও পথ না পেয়ে তোমার কাছে এসেছি’ যৌগিক বাক্যে লেখো।

যৌগিক বাক্য – ‘কোথাও পথ পেলুম না, তাই তোমার কাছে এসেছি।’

‘বিপদে পড়লে ঈশ্বরকে স্মরণ করবে’ – জটিল বাক্যে লেখো।

যখন বিপদে পড়বে, তখন ঈশ্বরকে স্মরণ করবে।

‘আমাকে না বলে যাবে না’-যৌগিক বাক্যে লেখো।

আমাকে আগে বলবে, তারপর তুমি যাবে।

ধৈর্য ধরলে বিপদ কেটে যাবে’- যৌগিক বাক্যে লেখো।

ধৈর্য ধরো, বিপদ কেটে যাবে।

বিশেষণ ও বিশেষ্য যোগে একটি বিশেষ্য খণ্ড তৈরি করে বাক্যে ব্যবহার করো। 

মেধাবী ছাত্রটি আসছে। বাক্যটিতে ‘মেধাবী ছাত্রটি’ হল বিশেষ্য খণ্ড এবং আসছে ক্রিয়া খণ্ড। বাক্যে ‘মেধাবী’ হল বিশেষণ ও ‘ছাত্রটি’ হল বিশেষ্য।

যোগ্যতাহীন বাক্যের একটি উদাহরণ দাও।

মানুষ চোখ দিয়ে শোনে। (বাক্যটিতে অর্থগত দিক থেকে যোগ্যতার অভাব রয়েছে কারণ মানুষ চোখ দিয়ে শুনতে পারে না।)

নির্দেশ অনুযায়ী বাক্যটি পরিবর্তন করো বৃথা আশা মরিতে মরিতেও মরে না। (যৌগিক বাক্যে)

আশা বৃথা, তবু তা মরিতে মরিতেও মরে না।

Leave a Comment