ভারতের জলপথ পরিবহণের গুরুত্ব আলোচনা করো অথবা, জলপথকে উন্নয়নের জীবনরেখা’ বলে কেন
ভারতের জলপথ পরিবহণের গুরুত্ব আলোচনা করো। |
ভারত নদীমাতৃক দেশ হওয়ায় এবং তিনদিক সমুদ্রবেষ্টিত হওয়ায় অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে জলপথের গুরুত্ব অপরিসীম।
সুলভ ও উন্মুক্ত পরিবহণ
জলপথ নির্মাণ বা রক্ষণাবেক্ষণে খরচ নামমাত্র। তাই অন্যান্য মাধ্যমের জলপথ তুলনায় পরিবহণে খরচ খুব কম হয়। তা ছাড়া জলপথে কোনো অবরোধ, যানজট হয় না। ফলে, পরিবহণে উন্মুক্ত ও সুলভ জলপথের গুরুত্ব অসামান্য।
ভারী পণ্য পরিবহণ
খনিজ তেল, আকরিক লোহা, কয়লা, ইস্পাত, মোটরগাড়ি, ট্রাক প্রভৃতি বিভিন্ন ভারী পণ্যসামগ্রী ও মেশিনপত্র পরিবহণের ক্ষেত্রে জলপথ সবচেয়ে বেশি উপযোগী।
শিল্পোন্নতি
শিল্পক্ষেত্রে জলপথ পরিবহণ অধিক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, জলপথে পরিবহণ ব্যয় কম হওয়ায় শিল্প উৎপাদনেও ব্যয় কম হয়। ফলে, শিল্প লাভদায়ক হয়ে ওঠে ও তার বিকাশ ত্বরান্বিত হয়। যেমন- হুগলি শিল্পাঞ্চল।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের প্রসার
উপকুলীয় সমুদ্র ছাড়া বাকি অংশে কোনো বাধানিষেধ থাকে না এবং নির্দিষ্ট কোনো পথ নেই। ফলে, জলপথ পরিবহণের মাধ্যমে বিশ্বের যে-কোনো দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। অর্থাৎ, জলপথ পরিবহণের বাণিজ্যিক গুরুত্ব সর্বাধিক।
অভ্যন্তরীণ পরিবহণ
দেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে সুলভে পণ্য ও যাত্রী পরিবহণে নদী ও খালপথগুলির গুরুত্ব অপরিসীম। এ ছাড়া উপকূলীয় জলপথের মাধ্যমে দেশের একাধিক বন্দরের মধ্যে যাত্রী ও পণ্য পরিবাহিত হয়।
শিক্ষা ও সংস্কৃতির বিকাশ
জলপথের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছাড়াও শিক্ষা ও সংস্কৃতির আদানপ্রদান ঘটে।
পর্যটন শিল্পের বিকাশ
ভারতের আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, লাক্ষাদ্বীপ, সুন্দরবন, কেরালার কয়াল ও উপকূলের বিভিন্ন অংশে পর্যটন শিল্পের বিকাশে জলপথের ভূমিকাই প্রধান। জলপথের এই অপরিসীম গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে জলপথকে ‘উন্নয়নের জীবনরেখা’ বলে অভিহিত করা হয়।
আরও পড়ুন – শৈশবের স্মৃতি রচনা