ভারতের অভ্যন্তরীণ জলপথের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও

ভারতের অভ্যন্তরীণ জলপথের সংক্ষিপ্ত পরিচয়

ভারতের অভ্যন্তরীণ জলপথের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।
ভারতের অভ্যন্তরীণ জলপথের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।
ভারতের জলপথকে তিনভাগে ভাগ করা হয়। যথা- A অভ্যন্তরীণ জলপথ, B উপকূলীয় জলপথ ও C আন্তর্জাতিক জলপথ।

অভ্যন্তরীণ জলপথ

ভারতে নদী, খাল ও হ্রদের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ জলপথ ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে।
নদীপথ: গঙ্গা ভারতের দীর্ঘতম অভ্যন্তরীণ জলপথ। এই নদীর হলদিয়া থেকে এলাহাবাদ পর্যন্ত প্রায় 1,620 কিমি জলপথ 1 নং জাতীয় জলপথ নামে পরিচিত। পশ্চিমবঙ্গ, বিহার ও উত্তরপ্রদেশে এই নদীপথ বাণিজ্যপথ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। গঙ্গার বিভিন্ন উপনদী ও শাখানদী যেমন- যমুনা, গোমতী, ঘর্ঘরা, কোশী, শোন প্রভৃতিতে নৌকা, লঞ্চ, স্টিমার চলাচল করে।
ব্রহ্মপুত্র ও তার উপনদীগুলি (সুবর্ণসিরি, দিহং, লোহিত প্রভৃতি) উত্তর-পূর্ব ভারতের গুরুত্বপূর্ণ জলপথ। ব্রহ্মপুত্র নদের সদিয়া থেকে ধুবড়ি পর্যন্ত 91 কিমি জলপথ 2 নং জাতীয় জলপথ-এর মর্যাদা লাভ করেছে।
এ ছাড়া দক্ষিণ ভারতের মহানদী, গোদাবরী, কৃষ্ণা, কাবেরী, নর্মদা, তাপ্তী প্রভৃতি নদীর নিম্ন অংশ জলপথ পরিবহণের উপযোগী। জুয়াড়ি ও মাণ্ডভি নদী দুটি গোয়া রাজ্যের পরিবহণের ধমনীস্বরূপ।
খালপথ: ভারতের অনেকগুলি খাল অভ্যন্তরীণ জলপথ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। যেমন- হরিদ্বার ও কানপুরের গঙ্গা খাল, অন্ধ্রপ্রদেশ ও তামিলনাড়ুর বাকিংহাম খাল, কৃষ্ণা বদ্বীপ অঞ্চলের কোম্মামুর খাল, অন্ধ্রপ্রদেশের কুর্নুল-কুডাপ্পা খাল, পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর খাল, ইস্টার্ন ও সার্কুলার খাল, হিজলি খাল, দুর্গাপুর খাল, বিহারের শোন খাল প্রভৃতি।
 
হ্রদ ও উপহ্রদ: ভারতে বড়ো বড়ো হ্রদ ও উপহ্রদগুলি জলপথের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। যেমন- কেরলের উপহ্রদ (কয়াল) গুলিকে পরস্পর যুক্ত করে সুদীর্ঘ অভ্যন্তরীণ জলপথ গড়ে উঠেছে। এই রাজ্যে ভারতের ও নং জাতীয় জলপথটি উত্তরে এর্নাকুলাম থেকে দক্ষিণে কোল্লাম পর্যন্ত বিস্তৃত। এ ছাড়া ওড়িশার চিল্কা, অন্ধ্রপ্রদেশের কোলেবু, তামিলনাড়ুর পুলিকট প্রভৃতি হ্রদ উল্লেখযোগ্য।
পরিশেষে বলা যায়, ভারতের অভ্যন্তরীণ জলপথের উন্নয়ন ও পণ্য পরিবহণের জন্য 1967 সালে কেন্দ্রীয় অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহণ পর্ষদ [Central Inland Water Transport Corporation] ও 1986 সালে ভারতীয় অভ্যন্তরীণ জলপথ অথরিটি [Indian Waterways Authority of India] গঠিত হয়।

Leave a Comment